বইঃ গাভী বিত্তান্ত
লেখকঃ আহমদ ছফা
প্রকাশকঃ সন্দেশ (প্রথম প্রকাশক)
সময়কালঃ ১৯৯৫
পটভূমিঃ ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন জৈব রসায়নের অধ্যাপক আবদুল মান্নান।
ছাত্রদের গোলাগুলির মাঝখানে পড়লে ‘বিশেষ যোগ্যতায়’ নিয়োগ পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের গর্ভবতী গাভিটি নিহত হয়। সত্য এ ঘটনাকে উপজীব্য ধরে রচিত গাভী বিত্তান্ত উপন্যাসের প্রকাশ হয় ১৯৯৫ সালে। উপন্যাসের অনেক চরিত্রই পাঠকদের তাই চেনা-পরিচিত মনে হবে।কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ না করেই এ উপন্যাসে ছফা বলেন,
‘‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টির ছিল গৌরবময় অতীত। অনেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গোটা দেশের আত্মার সঙ্গে তুলনা করে গর্ববোধ করতেন। অতীতের গরিমার ভার বইবার ক্ষমতা বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই।’’
কাহিনী সংক্ষেপঃ রসায়নের অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ আবু জুনায়েদ দেশের সেরা ও প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচিত হয়েছেন। রসায়ন বিভাগের সুন্দরী শিক্ষিকা দিলরুবা খানমের আকর্ষণে জুনায়েদ ডোরাকাটা দলের শিক্ষক রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলেন। পূর্ববর্তী উপাচার্যের উপর ক্ষোভবশত দিলরুবা খানম তাঁর নারীপ্রভাবকে কাজে লাগিয়ে জুনায়েদকে উপাচার্য প্যানেলে ঢুকিয়ে দেন। স্বৈরাচারী সরকারের অবাধ্য হবে না বলে রাষ্ট্রপতি (যিনি পদাধিকারবলে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যও) জুনায়েককেই উপাচার্য নিয়োগ দেন। এই উপাচার্যের পদে আসীন হওয়ার পর জুনায়েদের চরিত্রের বিবর্তনকে ঘিরে আবর্তিত হয় উপন্যাসের কাহিনী।
ঠিকাদার শেখ তবারক আলী উপাচার্যকে হাতে রাখতে জুনায়েদের মনোবাসনা পূর্ণ করতে একটি দুর্লভজাতের গাভী কিনে দেন এবং ভিসির বাংলোতে শেখ তবারক আলী নিজ জামাতা বুয়েটপাস সিভিল ইঞ্জিনিয়ার আবেদ হোসেনকে দিয়ে গোয়ালঘর বানিয়ে দেন। পরবর্তীতে উপাচার্য আবু জুনায়েদের জীবন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ সবটাই হয়ে পড়ে গোয়ালঘরকেন্দ্রিক। এই গোয়ালঘরকে রঙ্গমঞ্চ বানিয়ে আহমদ ছফা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দৈন্যদশা এবং শিক্ষক রাজনীতির নোংরা বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন।