আজ আমার বিয়ে।
পরনে বেনারসী শাড়ি, মাথায় ঘোমটা, কপালে লাল টিপ
চোখে কাজল, হাতে মেহেদির রঙ;
আর মাত্র কয়েকটি মূহুর্তের অপেক্ষা, তারপরই
আমি পাবো তাকে একান্ত আপন করে চেয়েছি যাকে -
জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আমার সহযাত্রী রূপে,
প্রতিটি দুঃখ-বেদনায় সমব্যথী রূপে
হাসি-আনন্দ-উচ্ছ্বলতার অংশীদার এক বন্ধু হিসেবে।
আর মাত্র কয়েকটি মূহুর্ত, তারপরই
আমার অনেক প্রতীক্ষার বিয়ে।
এ যে শুধু বিয়ে নয়, এ এক ভালোবাসার বিজয়
প্রেমিকার ভালোবাসার স্পর্শে
দ্বিধাগ্রস্ত যুবকের আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার পরম বিস্ময়!
অনার্সের চার বছরের চেনা-জানা সহপাঠী-
শান্ত, নম্র ও বিনয়ী কিন্তু সর্বদাই দ্বিধাগ্রস্ত সবকিছুতে;
সিদ্ধান্ত, ঝুঁকি বা দায়িত্ব নেবার ক্ষেত্রে প্রচণ্ড উদাসীন।
ওর গোবেচারা চেহারাটা মায়ায় ফেলে দিল আমায়;
বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ দিনগুলোতে বলেই ফেললাম-
আমার ভালোলাগার কথা, সেও সায় দিল তাতে।
রেজাল্টের পর দু’জনেই ঢুকে গেলাম কাজের জগতে;
প্রস্তাব দে’য়া হলো ওর মা বাবার কাছে,
আমাকে পছন্দ করলেন না তারা।
নিজের ভালোলাগা ও ভালোবাসার বিষয়টি
স্পষ্ট করে বলার সাহস তার ছিল না কোনকালেই,
সম্পর্কটা হয়ত এখানেই শেষ হতে পারত;
করুণা চাইলাম ওর-
জীবনতো একটাই,
কি লাভ এর সুন্দর মূহুর্তগুলো হতে বঞ্চিত হয়ে?
না হয় বন্ধুত্বটুকুই দিলে আমায়।”
তারপর, পার হয়ে গেছে একটি বছর।
অফিস ছুটির পর প্রায় প্রতিটি সন্ধ্যায়
ক্যাফেতে বসেছি, বলেছি কথা ঠিক যেমন করে
বন্ধু কথা বলে বন্ধুর সাথে।
এরইমধ্যে কোত্থেকে হঠাৎ এতটা
সাহস আর আত্মবিশ্বাস পেল
আমি নিজেও তা বুঝতে পারিনি!
মা-বাবাকে ভালোবাসার কথা জানিয়ে দিল সে
একমাত্র সন্তানের প্রেম
বিনাবাক্য ব্যয়ে মেনে নিলেন তারা,
আর তাই আজ আমার বিয়ে,
আমাদের বাড়িতে বাজছে সানাইয়ের সুর।