অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা পঞ্চগড়। পঞ্চগড় বাংলাদেশের সবচেয়ে উত্তরের জেলা। শীতপ্রবণ এই পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া গেলেই দেখা মিলবে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহৎ পর্বতমালা কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ। অদূরে চোখে পরবে হিমালয় এবং কাঞ্চনজঙ্ঘার মায়াবী রূপ! প্রকৃতিপ্রেমী এবং ভ্রমন পিপাসুদের জন্য খুবই আকর্ষনীয় জায়গা এই কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ। চলুন জেনে নেই কিভাবে যাবেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গটিতে।
তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ
কাঞ্চনজঙ্ঘা পৃথিবীর তৃতীয় বৃহৎ পর্বতশৃঙ্গ। এই পর্বতমালাটির উচ্চতা ২৮,১৬৯ ফুট। বাংলাদেশ এবং ভারত সীমান্তের বুক দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মহানন্দা নদী। এ নদীর তীর থেকেই দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গটির অপূর্ব দৃশ্য। কিন্তু কয়েকবছর ধরেই তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে খালি চোখেই দেখা মিলছে এই অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা পর্বতশৃঙ্গটির। ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা মহানন্দা নদীর তীর থেকে হেমন্ত ও শীতকালে উপভোগ করতে পারেন কাঞ্চনজঙ্ঘার অপার সৌন্দর্য। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায় সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘা একটু কালচে দেখায় তারপর আস্তে আস্তে টুকটুকে লাল, কমলা, হলুদ এবং সাদা রং ধারণ করে।
কখন যাবেন
কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গটির দেখা সারাবছর মিলে না। স্থানীয়দের মতে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বরের মাঝামঝি সময়ে আকাশ মেঘহীন থাকে আর এই সময়টাতেই দেখা যায় পৃথিবীর তৃতীয় বৃহৎ পর্বতমালাটি। বরফে ঢাকা অসাধারণ এই পর্বতশৃঙ্গটি দেখতে চাইলে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বরের মাঝামঝি সময়ে যেতে হবে। এই সময়গুলোতে আকাশ পরিষ্কার থাকলে দেখা মিলবে অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গটির।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে পঞ্চগড় যেতে বেশকটি বাস রয়েছে। নন-এসি বাসগুলোর মধ্যে হানিফ এবং নাবিল পরিবহণ করে পঞ্চগড় যেতে পারেন। ঢাকা থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত সরাসরি কোন এসি বাস নেই। এসি বাসে করে যেতে চাইলে প্রথমে রংপুর যেতে হবে। এসি বাসগুলোর মধ্যে টি আর ট্রাভেলস, গ্রীণলাইন এবং আগমণি দিয়ে রংপুর যেতে পারেন। রংপুর থেকে অন্য পরিবহণে পঞ্চগড় যেতে পারেন। পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ার উদ্দেশ্যে সারাদিনই বেশকিছু বাস চলাচল করে। চাইলে ঢাকা থেকে তেঁতুলিয়ায় সরাসরি বাসে করে যেতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
পঞ্চগড়ে বেশকিছু থাকার হোটেল রয়েছে। এগুলো খুব সাধারণ মানের আবাসিক হোটেল। এছাড়াও মহানন্দা নদীর কাছে রয়েছে কয়েকটি ডাকবাংলো। সবচেয়ে ভালো হয় এই বাংলোগুলোতে থাকতে পারলে। এই বাংলোগুলোতে থাকতে হলে আগে থেকেই তেঁতুলিয়া উপজেলা বা জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। এছাড়াও রয়েছে বনবিভাগের রেস্ট হাউজ। এই রেস্ট হাউজে থাকতে চাইলে জেলা সদর অথবা তেঁতুলিয়ার বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিতে হবে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরেও জেলাপরিষদের ডাকবাংলো রয়েছে।
পর্যটকদের জন্য সব ব্যবস্থা থাকায় এই জেলার অপরূপ সৌন্দর্যের কারণে দিন দিন ভ্রমণপিপাসুদের কাছে পঞ্চগড় খুবই আকর্ষনীয়। হাজার বছরের গৌরব-গাথা ও প্রাচীন ইতিহাস-ঐতিহ্যের অগণিত স্মৃতিমণ্ডিত এই পঞ্চগড়। পরিবার কিংবা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে দেখে আসুন তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ এবং ব্যস্থতাপূর্ণ জীবন থেকে কিছুটা সময়ের জন্য হারিয়ে যান প্রকৃতির বুকে।