বর্তমানে বিভিন্ন শ্রেণির নারীদের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে ঘরে ও বাইরে। ফলে ট্রেডিশনাল শাড়ি অথবা সালোয়ার কামিজ পরে দ্রুত চলাফেরা করার ট্রেন্ডও কমে যাচ্ছে দিন দিন। আর দীর্ঘসময় শাড়ি ও সারোয়ার-কামিজের মধ্যে থাকা টাও কষ্টকর। সে কারণে ডিজাইনারাও এ যুগের কর্মব্যস্ত নারীদের কথা মাথায় রেখে ট্র্যাডিশনাল পোশাকের সঙ্গে দেশীও পোশাক বা পাশ্চাত্যের পোশাকের সংমিশ্রণে তৈরি করেছেন ফিউশনধর্মী সব পোশাক।
শাড়ি ও সালোয়ার কামিজের ট্রেন্ড আগের থেকে অনেকটাই কমে গিয়েছে। শাড়িটা হয়ে গেছে উৎসবের পোশাক। আগে স্কুলের কোনো শিক্ষিকাকে শাড়ি ছাড়া দেখাই যেত না বলতে গেলে। এখন সেটার পরিবর্তন হয়েছে। এখন অনেক কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষিকা দের শাড়ি পরা বাধ্যতামূলক না। টপস, ফতুয়া এখন বয়স্ক নারীরাও পরছে। আগে রঙিন শাড়ি-পোশাক বেশি বয়সীরা পরতো না। এখন সেই ধারাটাও বদলেছে। তার মতে, ফ্যাশন সব সময় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। পরিবর্তনটা হয় ধীরে ধীরে। তাই সেটা হঠাৎ করে চোখেও পড়ে না। কয়েক বছর পরে গিয়ে হয়তো মনে হয়, বড় একট পরিবর্তন ঘটেছে।
ষাটের দশক থেকে আশির দশক পর্যন্ত শিশুরা পরিধান করতো ফ্রক আর হাফপ্যান্ট। কিশোরী মেয়েরা পরতো সালোয়ার-কামিজ সঙ্গে ওড়না। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েরা পোশাক হিসেবে পরতো শাড়ি। তবে এ ধারা বদলাতে শুরু করে আশির দশকে। সেই পরিবর্তনটাই এখনও হচ্ছে ব্যাপকভাবে।
আজকাল মেয়েরা কুর্তি, প্যান্ট, প্লাজো বা ওয়ানপিসগুলো পরতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ভার্সিটি পড়ুয়া মেয়েদের মধ্যে এখন ওয়ানপিস, কুর্তি অথবা টপসের সাথে প্যান্ট বা প্লাজো পড়ার ট্রেন্ডও চোখে পড়ে । তা ছাড়া একটি পছন্দসই থ্রিপিস কিনতে সর্বনিম্ন পনেরস থেকে আড়াই হাজার টাকা লাগে, সেখানে একটা ওয়ানপিস কিনতে ৬শ থেকে ১০০০ টাকায় পাওয়া যায়। আর ওয়ান পিসগুলো লেগিংস, প্যান্ট বা প্লাজোর সঙ্গেও পরা যায়। আর এটা দেখতে ফ্যাশনেবল।
আমাদের দেশে শাড়ির ব্যবহার আগের থেকে কমেছে। তবে উৎসবে নারীরা এখনো শাড়ি পরছেন। সালোয়ার কামিজের জায়গায় কিছু পরিবর্তন এসেছে। যেমন কামিজটা হয়তো একটু ছোট হয়ে ফতুয়া কিংবা টপস বা সিঙ্গেল কামিজ হয়েছে। এখন মেয়েরা বাজেটের কথা চিন্তা করেই একটা পায়জামা বা প্যান্টের সঙ্গে কামিজ বা টপস পরছে, তেমনি ওড়না অনেক সিঙ্গেল কামিজের সঙ্গেও ব্যবহার করতে পারছে। তাই থ্রিপিসের ব্যবহার কিছুটা কমেছে।
ডিজিটাল দুনিয়ায় ফ্যাশনটা এখন হাতের মুঠোয়। ভারত-পাকিস্তান-ইউরোপে কি ধরনের ফ্যাশন চলছে সব ঘরে বসেই দেখা যায়। ফলে দ্রুতই বদলে যাচ্ছে ফ্যাশন জগত।