"সোফির জগত" নরওয়েজিয়ান লেখক ইয়েস্তান গার্ডারের এই বইটিকে বলা হয় দর্শনের স্তম্ভ। মূল বইটি নরওয়েজিয়ান ভাষায় লেখেন গার্ডর। পরে অনেক ভাষায় অনুবাদ হয়। সোফির জগৎ বইটিকে আমার কাছে অসাধারণ মনে হয়েছে।
কারন লেখকের প্রশ্নগুলো আমার মনেও কিশোর বয়সে মাথায় হেমারিং করতো। কারো কাছে জানতে চাইতাম না ভয়ে এবং কিছুটা লজ্জায়। উত্তর খুজে নিতাম নিজের মত করে।
বয়ঃসন্ধিকালে নিশ্চয় আমার বাবারও একই প্রশ্ন ছিল। তার বাবারও ছিল এবং তার বাবারও ছিল। ভবিষ্যতে আমার ছেলে-মেয়ের মনেও একই প্রশ্ন জাগবে কোন ভুল নেই। শেষ কথা হলো প্রশ্নগুলো কখনো না কখনো মনে আসবেই। এই একই চিন্তা আমাদের আগে আরো অনেকেই করে গেছে। লেখক যে ভাবে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছেন আমার ভীষণ ভাল লেগেছে। খুব গোছানো উত্তর দিয়েছেন ইয়েস্তান গার্ডর। যে উত্তরগুলো পাইনি সেগুলো হয়তো পেয়ে যাব কোন এক সময়। হয়তো এই বইয়ের মধ্যেই আছে কিন্তু আমার মোটা মাথা সেটা ধরতে পারছে না। তাই আমার মনে হয়েছে বইটি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়া উচিত। আলবার্তো নক্স নামের এক প্রৌঢ় দার্শনিক উপন্যাসের প্রধান চরিত্র সোফিকে দর্শন শেখানোর মাধ্যমে নরওয়েজিয়ান লেখক ইয়েস্তান গার্ডর তার বক্তব্য তুলে ধরেছেন পাঠকদের সামনে। অনুবাদক জি এইচ হাবিবকে অনেক অনেক ধন্যবাদ বইটি বাংলা অনুবাদ করার জন্য।
বইটি আমাকে মুগ্ধ করার আরেকটি কারন আছে, যখনই মন বিক্ষিপ্ত থাকে এই বইটি টনিকের মত কাজ করে। নিজেকে ভাবার অবকাশ দেয়। বইটিতে একটি লাইন আছে এরকম, "একজন ভালো দার্শনিক হওয়ার পূর্বশর্ত হলো বিস্মিত হওয়া"। মজার ব্যাপার হলো আমরা দিনে দিনে বিস্মিত হওয়া ভুলে যাচ্ছি, হয়ত এটাই যান্ত্রিকতার লক্ষন!