অপ্রাপ্তির আক্ষেপ, অপূর্ণতার বেদনা
স্বপ্নভঙ্গের চাপা কান্না আর দীর্ঘশ্বাসের ঝড়ে
গত রাতে এ বুকে ঢেউ উঠেছিলো;
কখন জানি না ঝড় থেমে গেছে, স্তিমিত হয়েছে ঢেউ
ক্লান্তিতে অবসাদে ঢলে পড়েছি গভীর নিদ্রায়।
সহসা দমকা বাতাসে ছিটকে পরলাম অরণ্য-ঘেরা অন্ধকারে,
এরপর স্নিগ্ধ আলোক জ্যোতির মতন সামনে এলেন ঈশ্বর !
মৃদু হেসে খুব নরম গলায় বললেন
“বাছা, মনে খুব কষ্ট বুঝি ! হৃদয়ে সীমাহীন শূন্যতা ?
তুমি কি জানো, যে বস্তির পাশ দিয়ে খুব প্রয়োজনে
দু’একবার যাবার সময় দুর্গন্ধে নাক মুখ ঢেকেছো রুমালে
সেখানে নিদেন পক্ষে এক লাখ মানুষের বাস
টিনের চালের ঐ ছোট ছোট ঘুমটি ঘরে !
রাস্তার মোড়ের যে লোকটিকে অফিস যাবার সময়
প্রায় প্রতিদিন দেখো আর আবেগাপ্লুত হও করুনায়
পৃথিবীতে তার মতো অনেকের কাছেই
আলো আর অন্ধকারের তফাৎ নেই কোনো !
ওভার-ব্রীজের ওপরের হাত-পা বিহীন লোকটির কথা ভাবো,
যার সমস্ত শরীর জুড়ে বিশ্রী রকমের গোটা দেখে
ধপধপে পোশাকের মেয়েগুলো অস্বস্তিতে চোখ ঘুরিয়ে নেয়;
আর কেউ কেউ দু’-চারটি টাকা ছুঁড়ে দেয় টিনের থালায়।
সেদিনের দেখা লোকটির কথা ভাবো
ছয়টি বছর ধরে যার সর্বাঙ্গ বোধহীন, অনড়;
প্রাচুর্য্যরে সরোবরে অবাধে সাতরে বেড়ানো
দাম্ভিক মানুষটির পৃথিবী এখন
আটকে আছে শুধুই চার দেয়ালের মাঝে।
বসন্তের দুপুরে যে মেয়েটি কথা দিয়েও
সঙ্গে করে নিতে পারেনি প্রেম নগরে আজ এত বছর পরেও
সে অনুশোচনায় পোড়ে, প্রার্থনা করে তোমার মঙ্গল কামনায়।
ঘরে সুন্দরী স্ত্রী, স্বাস্থ্যবান সন্তান
তবুও কিসের এতো অভাব তোমার ! এতো হাহাকার !”
হঠাৎ আবার এক দমকা বাতাস
আর তারপরই নিকষ অন্ধকার... শুধু অন্ধকার...
দুর্গম পথ ধরে ছুটে চলেছি
যেন ছুটে চলেছি অনন্ত কাল ধরে; আলোর সন্ধানে।
ছুটতে ছুটতে আমি বড় ক্লান্ত; বিছানা ভিজে গেছে ঘামে;
জানালা খুলতেই এক চিলতে রোদ আর সজীব বাতাস।
এ যেন অন্য রকম সকাল, এক অপার্থিব সুখ !