আঁধার ঘন অভিমানী রাত,
নিরবধি কেঁদে চলেছে শ্রাবণ-আকাশ ;
কবিতার খাতা খুলে গভীরতর একাগ্রতায় ধ্যানমগ্ন আমি।
স্তব্ধতার চাদর চিরে হঠাৎ মুঠোফোন বেজে ওঠেÑ
হ্যালো ...
কে বলছেন ?
হ্যালো ...
নেই কোনো সাড়া,
আরও খানিকটা নীরবতা; তারপর হঠাৎ
বেজে ওঠে এক অনিন্দ্য কণ্ঠস্বরÑ
আমি তোমার এক ভক্ত, বলতে পারো বিমুগ্ধ পাঠক,
নামটা না হয় নাই বা বললাম; শুধু এটুকু বলিÑ
ভালোভাবে না জানলেও এক সময় কিছুটা চিনতে আমায়।
অপরূপা না হলেও একবার দেখলে দ্বিতীয় বার
দেখবার লোভ সামলাতে পেরেছে খুব কম পুরুষই !
সেই কচি বয়সের কাঁচা লাবণ্যের কারণে
বিয়ের বয়স না হতেই রাণী করে নিলো
এক নামী-দামী বিত্তশালী।
বয়সের পার্থক্য থাকলেও অমন প্রাচুর্য ঘেরা জীবন
আর প্রগাঢ় অনুরাগে আপ্লুত আমি
নিজেই ঈর্ষান্বিত নিজের সৌভাগ্যে।
তারপর খুব বেশি দিন হয়নি,
ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠলো তার স্থবিরতা ;
অব্যাহত নি¯প্রভতায় জীবন হয়ে উঠলো অর্থহীন।
কোনো কোনো মাঝ রাতে প্লাবন আসে
মন উতলা হয় স্পর্শকাতর হাওয়ায়
উত্তাল সাগর ফুঁসে ওঠে কোটাল জোয়ারে
অদম্য ঢেউয়ের দোলায় দুলে ওঠে শরীর ;
তখন পাশে পড়ে থাকে এক নিস্তেজ পাহাড়।
আমি প্রাণপণ চেষ্টা করি পাহাড়কে জাগিয়ে তোলার
গোলাপ-পাপড়ি ছোঁয়াই তার নিরুত্তাপ শরীরে
তবু সে জাগে না
একটুও জাগে না ...
মিলন-তৃষিত বুক পুড়ে যায় তুষের আগুনে।
তরফদার বাবু, তুমি তো নদী, রাজপথ, নগর-জীবন
এমন কি আহত গোলাপের বেদনার কথা লেখো,
তুলে ধর ভালোবাসা পাওয়া না পাওয়ার
সুখ কিংবা কষ্টের কাহিনী;
তোমার অনুরক্ত এক পাঠিকার এই
অন্তর্গত বেদনা নিয়ে কি লিখবে একটি কবিতা ?
এ বুকে জমে থাকা অসংখ্য দীর্ঘশ্বাস আর চাপা কান্না
এ চোখের প্রতিটি তপ্ত অশ্র“কণা
ভালোবাসার ফুল হয়ে ফুটে উঠুক তোমার আহত অক্ষরে;
এ বুকের ছাই-চাপা আগুন দাউ দাউ করে
জ্বলে উঠুক তোমার কাব্যের পঙ্ধসঢ়;ক্তিতে।
তারপর...
আকাশ ভরে বৃষ্টি নামুক ...
বৃষ্টি নামুক অঝোর ধারায় !