পশ্চিম আকাশে আবীর ছড়িয়ে
সব রঙ মুছে দিয়ে, শুষে নিয়ে সবটুকু আলোকের ঘ্রাণ
দিনমনি চলেছে অস্তাচলে;
বাবলা গাছের নিচে বসেছি পা ছড়িয়ে- পাশে সুদীপা;
সামনে আষাঢ়ের স্রোতস্বিণী নদী, পেছনে ব্যস্ত সড়ক।
দূর হতে ছুটে আসা দখিনা হাওয়া হিল্লোল তুলে
নদীজলে আর সুদীপার রেশমী দীঘল চুলের অরণ্যে।
তার মৌন দৃষ্টি ছুঁয়ে যায় দূরের আকাশ
মাথার উপর দিয়ে এক ঝাঁক পাখি উড়ে যায় ক্লান্ত ডানায়।
হঠাৎ মৌনতা ভাঙে সুদীপার-
চোখে ক্ষোভ আর দুঃখের মিলিত স্রোতের ঝর্ণা;
কষ্টের ঝড়ো বাতাসে বুকের সমুদ্রে তার বিপন্ন ঢেউ,
মুখে হতাশা আর কন্ঠে বিলাপের ধ্বনি-
"এ আমি কাকে চেয়েছি জীবনে জড়াতে !
দিনের পর দিন যে হৃদয়ের নরম জমিনে
শুধু মিথ্যে স্বপ্নের বীজ বুনে গেছে;
এমন প্রবঞ্চক, স্বার্থপরকে ভালোবেসেছি আমি
কেনো এ বঞ্চনা, এমন নিষ্ঠূর পরিহাস !"
ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে সুদীপা, অসহায় ভাবে মাথা রাখে কাঁধে;
একটু স্নেহ পেতেই দু’হাতে জড়িয়ে মিশে যায় বুকে।
তার কষ্টগুলো মূর্হুতে নাড়া দেয় গভীরে কোথাও-
আমার বুকের মৃত্তিকা ভিজে যায় তার বিষাদের বৃষ্টিতে !
এতোদিনের চেনা সুদীপা হঠাৎ প্রস্ফুটিত হয় অচেনা সৌরভে !
বিমুগ্ধ আবেগে বলে ওঠে-
"কি অদ্ভুত প্রশান্তি প্রশস্ত এ বুকে- এতোদিন পাইনি খবর !"
সূর্যটা সবে গিয়েছে ডুবে, অন্ধকারের ছায়া ছুঁয়েছে আকাশ,
সন্ধ্যা তারা উঠেছে জ্বলে আপন দীপ্তিতে-
এমন গোধুলী বুঝি কখনও আসেনি আগে।