Choose your product from the mega showcase from thousands of sellers
BD Trade Blogs
> Blogs > কবিতা > শূন্যতার সেই দীর্ঘশ্বাস

শূন্যতার সেই দীর্ঘশ্বাস


অসীম তরফদার

চলতে চলতে জীবনের অনেকটা পথ হেঁটে
অনেক রঙিন ফাগুন হয়েছে বিলীন;
সবুজ বনানী, কাশবন, নদী, বালুচর পেরিয়ে
ফসলের মাঠ, হিজল আমলকী বৈচির বন পেছনে ফেলে
শিমুল, পারুল, চাঁপা, জুঁই, গাঁদা
কত নাম না-জানা ফুল পথের দু’ধারে রেখে
জীবনের এক অবসন্ন বাঁকে এসে দাঁড়িয়েছি আজ।
কোনো কোনো বিষণ্ন প্রহরে চুপিসারে
মনের বেলাভূমি ভিজিয়ে দেয় সে সব দিনের ঢেউ,
যে জীবন ছিলো ঝর্ণার মতো দুর্বার, চঞ্চল, গতিময়,
খরস্রোতা নদীর মতো স্রোতস্বিনী ছলছল;
কখনও বা পৌষের শীর্ণ নদীর মতো গতিহীন
আবার কখনও দীঘির জলের মতো নিথর।
অবসরে কোনো কোনো দুর্বল মুহূর্তে
নিজের হৃদয়টাকে খুলে দেখি-এক বুক শূন্যতা।
ভালোবাসার শত রঙে সাজানো মন্দির
আজও ফাঁকা, বিরান মাঠের খোলা হাওয়ায়।
প্রথম যৌবনে পরমাকে দেখে মনে হয়েছিলো,
আমার হৃদয় রাণী বুঝি পেয়ে গেছি !
কিন্তু দেবীকে আবাহনের আগেই দেখি
অন্য এক বাহুর বন্ধনে সে বিগলিত প্রায়।
এরপর দেখা সুদীপার সাথে;
দূর নগরীর সপ্রতীভ মেয়ে
মাত্র ক’দিনের আলাপ এক অনুষ্ঠানে-
অথচ মনে হলো, অনেক যুগের জানাশোনা !
বিদায়ের আগে ঠিকানা চেয়ে বললো-
“চিঠি লিখলে উত্তর পাবো তো ?”
এত বছর প্রতীক্ষায় আছি-
কোনো চিঠি পত্তর আজও পাইনি।
নবনীতা আমার খুব ভালো বন্ধু,
সে একদিন বলেছিলো-
“তোর মতো সুপুরুষকে প্রতিটি মেয়েই চাইবে
নিজের করে পেতে, ভালোবাসতে;
হয়তো সঠিক মেয়েটি এখনও সামনে আসেনি
কিংবা খুব কাছেই আছে, এখনও পারিসনি চিনতে;
সময় হলেই কুয়াশার আঁধার ভেঙে
তোর হৃদয় নন্দিনী নিজেকে সঁপে দেবে।”
সত্যি সে আমার খুব ভালো বন্ধু ছিলো।
সময়ের স্রোতে একে একে সবাই হারিয়ে গেলেও

হারায়নি সে কিংবা ভুলে যায়নি কখনও।
পেশাগত প্রয়োজনে বদলি হয়েছি বিভিন্ন শহরে
আমি হয়তো ভুলেছি জানাতে, সে ঠিকই নিয়েছে জেনে-
আমার নতুন ঠিকানা, কুশল অথবা যন্ত্রণা।
একটা চিঠিতে লিখেছিলো-
“ঠিকানা বদলেছিস, জানাসনি;
চেষ্টা করলেও নিজেকে লুকাতে পারবি না, কিছুতেই নয়,
তোর সাথে ছায়ার মতো লেগে আছি-
যেখানেই যাস্ধসঢ়;, যত দূরেই থাকিস্ধসঢ়;।”
হয়তো আজও চিঠি লিখতো
সত্যি করেই লেপ্টে থাকতো ছায়ার মতো
অবসান হতো হৃদয় রাণীর আগমন প্রতীক্ষার; কিন্তু
যখনই খুঁজে পেলাম আমার আরাধ্য দেবী; বুঝলাম-
এ জীবনে সত্যি করে শুধু একজনই ভালোবাসে,
হায় ঈশ্বর! তখনই তাকে তুলে নিয়ে গেলে
এই পৃথিবীর আলো থেকে অন্য পৃথিবীর কোলে !
দেবীর আসন আজও তাই
শূন্য কলসের মতো অপূর্ণ রয়ে গেলো।
মাঝে মাঝে গভীর রাতে অসীম শূন্যতার সেই দীর্ঘশ্বাস
কেবলই কান্নার সুরে বেজে ওঠে বুকের বীণায়।


সাহিত্য >> কবিতা