Choose your product from the mega showcase from thousands of sellers
BD Trade Blogs
> Blogs > সম্পর্ক > সহকর্মীর সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উপায়

সহকর্মীর সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উপায়


সারাহ জেবীন

মানুষ সাধারণ ভাবেই সামাজিক জীব – খাবার এবং পানির মত আমাদের বন্ধুত্ব ও ইতিবাচক আচরণ এর প্রতি একটি প্রাকৃতিক টান আছে। তাই, কর্মক্ষেত্রে ভালো সম্পর্ক তৈরী হলে মানসিক প্রশান্তি ও কাজের আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে। এগুলোর বাইরেও সহকর্মীর সাথে সুসম্পর্ক আমাদের আরও কিছু সুবিধা দেয়: আপনার যদি সহকর্মী বা কলিগদের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকে, তবে আপনার আইডিয়া ও মতামতগুলো তারা সহজে গ্রহণ করবে। এর ফলে কর্মক্ষেত্রে সাফল্যের মাত্রা বেড়ে যাবে।

সহকর্মীদের সাথে সম্পর্ক ভালো না থাকলে, এগুলো সামলাতে গিয়ে আপনাকে অনেক সময়েই মানসিক শক্তি খরচ করতে হবে। অনেক সময়ে জোর করে মুখে হাসি ধরে রাখতে হবে – যা যথেষ্ঠ মানসিক চাপ তৈরী করে। এগুলো না থাকলে আপনি এই এনার্জি নিজের কাজের পেছনে ব্যয় করতে পারবেন – যা কর্মক্ষেত্রে আপনার উন্নতি ঘটাবে।

ক্যারিয়ারকে এগিয়ে নিতেও কর্মক্ষেত্রে সবার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকা জরুরী। আপনি কাজে যতই দক্ষ হোন না কেন, আপনার বস যদি আপনাকে পছন্দ না করেন, তবে জরুরী দরকারে ছুটি, প্রমোশন, বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আপনি অসুবিধায় পড়বেন। এর বাইরে অনেক ভালো ভালো সুযোগ সুবিধা আপনার হাতছাড়া হয়ে যাবে। বসের সাথে সম্পর্ক ভালো থাকলে আপনার অনেক ছোটখাট ভুল তাঁরা আমলে নেবেন না। বা সেইজন্য আপনার ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করবেন না।

সহকর্মীর সাথে সুসম্পর্ক থাকলে তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। তাদের অভিজ্ঞতা তারা শেয়ার করেন। ফলে কর্মী হিসেবে আপনার উন্নতি হবে। এছাড়া সহকর্মীদের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকলে, অনেক বিপদ আপদ বা ঝামেলাতেও তাঁরা সাহায্য করবেন।

মোট কথা, কর্মক্ষেত্রে বা অফিসে যত গুলো সুবিধা পাওয়া সম্ভব – সব সুবিধাই পাবেন যদি সহকর্মীর সাথে আপনার সুসম্পর্ক থাকে।

সহকর্মীর সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার উপায় গুলো জেনে নেয়া যাক:

সম্মান:

সহকর্মীরা যখন আপনাকে সম্মান করবে – তখন তারা আপনার মতামত, আইডিয়া ও কাজকে গুরুত্ব দেবে। টিম ওয়ার্ক বা একক কাজ – সব ক্ষেত্রেই আপনি তাদের সহযোগীতা ও সমর্থন পাবেন। আর সম্মান পাওয়ার উপায় হল, অন্যদের সম্মান করা, তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া, এবং কর্মক্ষেত্রে সব সময়ে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করা।

বিশ্বাস:

যে কোনও ভালো সম্পর্কের মূল ভিত্তিই হল বিশ্বাস। আপনার প্রতি আপনার টিম বা সহকর্মীর বা তাদের প্রতি আপনার যখন পুরো মাত্রায় বিশ্বাস থাকবে – তখন যোগাযোগ ও কাজ অনেক বেশি ফলপ্রসূ হবে। আপনি যদি আপনার সহকর্মী ও বা অধীনস্থদের পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারেন – তবে আপনি অনেক বেশি খোলামেলা ভাবে আপনার প্ল্যান এবং কাজ শেয়ার করতে পারবেন। সেইসাথে ‘সাবধান’ থাকার পেছনে নিজের কাজের এনার্জিও অপচয় হবে না।

সবার মতামতকে গুরুত্ব দেয়া:

কর্মক্ষেত্রে যাঁরা ভালো সম্পর্ক গড়েন, তাঁরা যে অন্যের মতামতকে শুধু গুরুত্বই দেন – তা না, তাঁদের নিজের আইডিয়ার চেয়ে ভালো আইডিয়া পেলে নিজেরটার বদলে অন্যেরটা গ্রহণ করেন। এতেকরে একটি অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যেখানে সবাই সবার মতামত নিশ্চিন্তে জানাতে পারে। কর্মক্ষেত্রে এই ধরনের আচরণের ফলে আপনার মতামতকেও অন্যরা গুরুত্ব দেবে।


দায়িত্ববোধ:

মানুষ দায়িত্ববান মানুষকে পছন্দ ও সম্মান করে। আপনার প্রতিটি কাজ ও কথার মাঝে দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। একদিন আপনার হয়তো মন ভালো লাগছে না, তাই বলে সহকর্মীদের সাথে খারাপ আচরণ করবেন না। অথবা কাজে ঢিল দেবেন না। নিজের পুরোটা দিয়েই কাজ করুন। এবং সহকর্মীর সাথে কড়া আচরণের বদলে ভদ্র ভাবে বলুন, আপনার আজ মুড কেন খারাপ। আপনি যখন কর্মক্ষেত্রে এমন আচরণ করবেন, তখন অন্যরাও আপনার প্রতি দায়িত্বশীল হয়ে উঠবে।

 

সঠিক তথ্য বিনিময়:

অফিসে বা কর্মক্ষেত্রে যে কাজটি বিরামহীন চলতে থাকে, তা হল তথ্য আদান প্রদান। মৌখিক, ইমেইল, কাজগপত্র, ফোন – বিভিন্ন মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠানে সারাদিন তথ্য বিনিময় হয়। এবং এই তথ্য বিনিময় অনেকটা শরীরে রক্ত চলাচলের মত – এটা বাধাগ্রস্থ হলে পুরো প্রতিষ্ঠানেরই ক্ষতি হয়। কর্মক্ষেত্রে সবার মাঝে ভালো সম্পর্ক থাকলে, প্রয়োজনীয় তথ্য জানানোর ক্ষেত্রে কেউ দ্বিধা করে না। আপনার সহকর্মী যদি আপনাকে ভয় পায়, অথবা অপছন্দ করে – তবে সময়মত প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। কাজেই, এটাই সম্ভবত কর্মক্ষেত্রে ভালো সম্পর্কের সবচেয়ে বড় উপাদান।


জীবনযাপন >> সম্পর্ক