: কবিতা লিখতে বসেছি;
শব্দের বিন্যাস হচ্ছে না কিছুতেই,
মনটাও নিবিষ্ট নয়,
কোন কিছুর শূন্যতা অথবা অবোধ্য আকাঙ্ক্ষা
কেবলই মনের দরজায় কড়া নাড়ছে খট্ খট্!
হঠাৎ তোমার ফোন-
মনে হল, মরুপথের তৃষ্ণার্ত যাত্রীর হাতে
কেউ তুলে দিল শীতল জলের মশক;
যেন তোমার অপেক্ষাতেই ছিলাম।
: কেন মিছে উপহাস অযথা সান্ত্বনা?
জানি, তুমি মোটেও ভাবো না আমাকে।
: জীবনে কখনও মিথ্যে বলিনি তোমাকে;
পারিনি কাটাতে প্রহর তোমাকে না ভেবে; আজ অব্দি না।
তোমার হাসি রাঙা মুখ আজও স্বপ্নে ভাসায়,
চোখের জল আপ্লুত করে নিঃসীম বেদনায়, আর
অসীম উৎসাহ করে উজ্জীবিত।
: তবে কেনো অভিযোগ, প্রতিটি লেখায়?
বুঝতে চাও না কেনো কষ্ট আর অক্ষমতা গুলো?
আমাকে দুঃখ দিয়েই তোমার অপরিমেয় সুখ!
: মাঝে মাঝে অনুভূতি প্রচন্ড ভোঁতা হয়ে যায়,
সুখ আর দুঃখের তফাৎ বুঝতে পারি না ততটা!
বুঝতে পারি না প্রভাতের নরম রোদ আর
গোধুলীর ফিকে আলোর ভিন্নতা!
শ্রাবনের অঝর ধারা আর কান্নার পার্থক্য,
অমাবশ্যা রাতের আকাশে তারার আলো আর
ঝাউবনের অন্ধকারে জোনাকীর আলোর তফাৎ
কিংবা স্বপ্ন ও বাস্তবের ব্যবধান!
প্রতি মূহুর্তে কেবল অব্যর্থ-নিশ্চিত অনুভব করি
বুক ভরা শূন্যতা আর তুমি-হীনতার যন্ত্রণা;
নিঃসঙ্গ মুহুর্ত গুলোতে ছাই চাপা আগুনের মত
ভেতরের মানুষটিকে পুড়িয়ে মারে নিঃশব্দে।
: সত্যি কি হারিয়ে গেছি?
কিছু সময় পর পর এই যে ঢেউয়ের মত
তোমার সৈকত ছুঁয়ে যাওয়া- একি সত্যি নয়!
: স্নেহ পিয়াসী মন একদিন
তোমার ভালোবাসার বৃষ্টিতে ভিজে
ভূলেছিল নিজের দীনতা আর বাস্তবতা।
হঠাৎ এক ভয়ঙ্কর ঝড়ে ছিটকে গেল সব;
স্বপ্ন ভেঙে গেলে নতুন করে চিনলাম নিজেকে,
ভূলে থাকা দু:স্বপ্নেরা জেগে উঠল আবার;
জ্বল জ্বল করে উঠল অসহায়ত্বের নগ্ন চিত্রটা।
মনে হল, কেন এই উদ্দেশ্যহীন পথচলা?
অর্থহীন বেঁচে থাকা?
কি মানে এই গতি বিহীন, গন্তব্যহীন জীবনের?
এমন দুর্বল মূহুর্তে তুমি এলে আবার,
টেনে তুলে ঠাঁই দিলে আপনার বুকে !
তারপর তোমাকে ঘিরেই তো আবর্তিত হই-
তোমার ইচ্ছের তুলিতে আঁকা পথে
তোমার চতুর্দিকে অথচ নির্দিষ্ট দূরত্বে থেকে !
: সময়ের প্রেক্ষিতে অবস্থানগত দূরত্ব যদিও বেড়েছে
মনের নৈকট্য কি কমেছে এতটুকু?
বরং তুমি ততটাই এসেছো কাছে আরও
যতটা গিয়েছো দূরে বাইরের দৃষ্টিতে;
তোমায় দেখি না যত বেশি দিন
ততই যেন বেশি স্পষ্ট দেখি আরও;
যত বেশি উপলদ্ধি করি স্পশের্র অভাব
তত বেশি উষ্ণতায় ছুঁয়ে যাও অস্থির মন, ব্যকুল অন্তর।
তোমার প্রতি আমার এই ক্রমবধিষ্ণু আকর্ষনের
পরিনতি কিংবা পরিনাম কি- জানি না;
তুমি যে আমায় বুঝতেপারো- এতেই সুখী।
: বুঝতে পারি বলেইতো চেষ্টা করি ঘুরে দাঁড়াবার,
সাহস খুঁজি অসার অনুর্বর চৌচির ভূমিতে লাঙল চালাবার;
বুঝতে পারি বলেইতো স্বপ্ন দেখি;
আজও কবিতা লিখি তোমাকে নিয়ে।
: তাহলে মাঝে মাঝে অমন থেমে যাও কেনো?
কেনো বেজে ওঠে হতাশা?
নৈরাশ্যের অন্ধকার ভেঙে
পারো না আলো করে দিতে আমার আঙিনা!
: তুমি পাশে থাকলে সব পারি আমি;
পারি ঝড়ের মাঝে পাড়ি দিতে উত্তাল সাগর,
রাতের অন্ধকারে সূর্যমুখীর হাসি ফোটাতে,
পারি হাসি মুখে হেঁটে যেতে শ্মশানের পথে।
আর তুমি না থাকলে কিছুই পারি না
কিছু পারতেও ভালো লাগে না।
তুমি চলে আসতে পারো আমার কাছে ?
আমার কুড়ে ঘরে?
: লক্ষীটি, আর একটু অপেক্ষা কর,
সময় হলেই ডেকে আনব।
: দুর্নিবার ইচ্ছেগুলো সর্বদাই ঢেকে রাখো ইচ্ছের চাদরে;
অপেক্ষায় থাকলাম, সেই সোনালী সুদিনের-
তোমাকে ভালোবেসে, বিশ্বাস করে
তোমারই স্বপ্নে স্বপ্নময় !