প্রতিনিয়ত প্রার্থনা করে যাচ্ছি করোনার তান্ডব থেকে বাঁচার জন্য। প্রার্থনা করছি এই বদলে যাওয়া সময়কে পেছনে ফেলে কাজে ফিরতে, আমার সেই চেনা পৃথিবী ফিরে পেতে। কিন্তু নির্মম সত্যিটা হলো এই, সফল গবেষণায় কোনো প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) অথবা প্রতিরোধক (ঔষধ) আবিষ্কর না হওয়া পর্যন্ত পৃথিবী করোনার প্রকোপ থেকে মুক্তি পাবে না। দ্বিতীয়ত পৃথিবীর কোনো প্রান্তে করোনার অস্তিত্ব যতক্ষন পর্যন্ত থেকে যাবে ততক্ষন পর্যন্ত এ পৃথিবীর কেউই নিশ্চিত নিরাপদ নয়। তবু, প্রার্থনা করে যাই। আমি প্রচন্ড রকম সৃষ্টিকর্তায় বা ঈশ্বরে বিশ্বাসী একজন মানুষ। একই সাথে ভীষণ রকম বাস্তববাদী। তাই জানি, আমার এ প্রার্থনার কারণে অলৌকিক কিছুই ঘটবে না; অদৃশ্য কোনো শক্তির প্রভাবে মুহূর্তেই বিলীন হবে না করোনার ধ্বংসলীলা। তবু, প্রার্থনা করে যাই কারণ প্রার্থনাই আমাদের একমাত্র আশ্রয়, মনের স্বস্তি, চিত্তের সন্তুষ্টি, হৃদয়ের সান্তনা। আমাদের প্রার্থনাতে অলৌকিক কিছু না হয় নাইবা ঘটলো, তবু যদি দ্রুত সময়ে কোনো ঔষধ বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়ে যায় !
এই চরম কঠিন সময়েও কিছু অমানুষ মাস্ক ও পিপিই নিয়ে কারসাজি করছে দেখে বিমর্ষ হই। হাসপাতাল গুলোতে যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা উপকরণ, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর সংকটের খবর শুনে শংকিত হই; আবার কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ববোধ, কর্তব্য-পরায়ণতা, উদারতা আর সেবার মানসিকতা দেখে আশান্বিত হই। এই দুঃসময়েও যখন শুনি- চোরগুলো ত্রাণের চাল, তেল চুরি করছে তখন সত্যি খুব হতাশ হযে পড়ি। কিন্তু যখন জানতে পারি প্রত্যেকটা চোরই ধরা পড়ছে, উদ্ধার হচ্ছে চুরি যাওয়া সব চাল আর তেল তখন আবার চারপাশে আশার আলোগুলো অনেক বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠে।
আমাদের স্বভাব অনুযায়ী আমরা প্রায় প্রত্যেকেই যে কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ (কিংবা বিশেষ ভাবে অজ্ঞ) হয়ে উঠি। করোনার ব্যাপারেও তার ব্যতিক্রম হবার কথা নয়। তবে আমরা যত বিশেষজ্ঞই হই না কেনো, বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে সরকার আমাদের যে নির্দেশনা দিচ্ছে সেটাই যেন আমরা মেনে চলি। বিশেষ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখি, ঘরে থাকি। নিজে সুস্থ থাকি এবং অপরকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করি।