গেলো কয়েক বছর খুব বেশি কথা হয়নি বাবার সাথে।
বাবা আমার থেকে দূরে থাকতেন অথবা তাঁর থেকে আমি; তবুও
ভৌগোলিক দূরত্বের বাঁধা পেরিয়ে বাবা ঠিক বুঝে যেতেন
আমার শক্তি, সামর্থ, অক্ষমতা কিংবা অন্তর্গত বেদনা !
আজ সহসাই মনে হলো, মাথার উপর থেকে হঠাৎ উধাও-
সেই বটবৃক্ষ ছায়া, সেই নিশ্চিত নির্ভরতা,
সেই অকৃত্রিম স্নেহের দুটি হাত !
জাগতিক বিষয়ে তিনি ছিলেন নির্মোহ,
সংসার আর সহায়-সম্পত্তির ব্যাপারে বড্ড বেশি উদাসীন!
পার্থিব জগতের সকল জটিলতাকে পাশ কাটিয়ে
পরমারাধ্যের আরাধনায় তিনি ব্রতী ছিলেন সর্বদা; তাই বিধাতা
এ নশ্বর পৃথিবী থেকে তাঁকে টেনে নিলেন নিজের কাছে।
জানি, ওপার থেকে আজও সেই চিরচেনা দুটি চোখে
দেখে চলেছেন আমাদের সবকিছুই;
প্রতিটি ভুল ক্ষমা করে পরম মায়ায় সেই দুটি হাত
আজও মাথায় বুলিয়ে করছেন আশীর্বাদ। তবু
আপনার সশরীরে অনুপস্থিতিতে হৃদয়ে আজ অসীম শূন্যতা;
মনের আকাশে পুঞ্জিভূত মেঘ, চশমার কাঁচে কুয়াশা;
নিষেধ অমান্য করে দু'চোখের জল যখন তখন গড়িয়ে মিশে
কালিগঙ্গার স্রোতে !
তবুও বাবা,অশ্রুভেজা চোখে আজ এই শুধু প্রার্থনা,
ঈশ্বর-সান্যিধ্যে আপনার অনন্ত জীবন
সুখময় হোক, শান্তিময় হোক !