BD Trade Blogs
> Blogs > গল্প ও ছোট গল্প > লোভী প্যাঁচা

লোভী প্যাঁচা


রঞ্জন হালদার

অনেক দিন আগের কথা তেওতা জমিদার বাড়ির মহারাজের  সদর দরজার  সামনে ছিল একটি নারিকেল গাছ,সে খানে  ছিলো একটি খোরল, সে খরলে থাকত একটি কোকিল। সে সকালে দুপুরে মধুর সুরে ডাক ডাকত।  সে  ডাক  শুনিয়া মহারাজ পাগল হইয়া  গেলেন। তাই তিনি মনে মনে ধারনা করিলেন, “ এই পাখিটাকে আমি ধরব ! এত মধুর  সুর এই পাখিটার। আমি ওকে ধরবই ধরব , ধরে আমার কাছে রাখবো । এই পাখি আমাকে  সকালে বিকেলে দুপুরে তার ডাক শুনাবে। আমি তা প্রাণ ভরে শুনব” রাজা এই কথা চিন্তা করিয়া তিনি রুপা দিয়া একটি খাঁচা বানাইলেন। তারপর ব্যাধকে ডাকিয়া আনিলেন বলিলেন,“এই নারিকেল গাছে একটি পাখি থাকে তাকে ধরে  দিবে।” ব্যাধ বলিলেন, “ঠিক  আছে  মহারাজ।  ”এই কথা নারকেল গাছের নিচে যখন আলোচনা করিতে ছিলেন  তখন কোকিল তা শুনিতে পায়। কারণ কোকিল মানুষের কথা বুঝিতে পারে  । কোকিল তখন বিকেল বেলা ঐ বাসা ত্যাগ করিয়া যাইতেছে । ঐ মহারাজের প্রাসাদের কোনে থাকিতো এক প্যাঁচা, তখন প্যাঁচা বলিল ”অবেলা কোকিলের নন্দন  যাচ্ছে  কোথায়” তখন কোকিল বলিল আমি আর এখানে থাকিব না। তখন প্যাঁচা চিন্তা করিল “ আমি এখানে থাকি এখানে  বৃষ্টি এলে বৃষ্টির সেচায় আমি ভিজিয়া যাই কোকিল তো আর আসিবে না তাহলে  আমি ঐ বাসায়  যাই । যা ভাবা সেই কাজ । সে ঐ বাসায় চলিয়া গেল । সন্ধ্যা ঘনিয়া  আসিলে ব্যাধ গাছে উঠিল , পাখিটাকে  ধরিয়া মহারাজের কাছে আনিল। বলিল, “মহারাজ! মহারাজ! মহারাজ! এই নিন আপনার পাখি ” মহারাজ পাখি পাইয়া সে কি আনন্দ। তিনি বলিলেন, বাহ্ পাখিটাতো খুবসুন্দর তাই তো এতো মধুর সুরে ডাকে। তখন পাখিটাকে তার রুপার খাঁচার রাখিলেন। কত ভাল ভাল খাবার আনিয়া পাখির সামনে দিলেন। পাখি আর খায় না পাখি আর ডাকে না পাখি তখন ভাবিতে লাগিলেন,“ কেন আমি ঐ বাসার প্রতি লোভ করিলাম। তাইতো আজ আমার এমন অবস্থা ” আর মনে মনে ভগবানকে ডাকিতে লাগিল, “হে ভগবান আর লোভ করিব না আমাকে মুক্তি দাও ভগবান।” গত একদিন দুদিন চলে গেল পাখি আর ডাকে না মহারাজ তখন চিন্তা করিতে লাগিলেন, “পাখি কেন আর ডাকে না তখন মহারাজকে কত গুলো লোক বলছে, “মহারাজ, আমরা পাখিটাকে ডাকাতে পারি। মহারাজ ভাবিলেন তাইতো যদি ওরা ডাকাতে পারে দেখুক না চেষ্টা করে। তখন ঐ লোকেরা বড় বড় কোনচি দিয়ে পাখিটাকে এদিক থেকে খোঁচা দেয়। আবার ও দিক থেকে খোঁচা দেয়। পাখিটা খুব অতৃষ্ট হয়ে গেল। তখন পাখিটা ভগবানকে বলিতেছে,  “হে ভগবান, আমার বাক্য খুলিয়া দাও, না হয় আমার  মৃত্যু দাও, আমি যেন মানুষের মত কথা বলতে পারি ।”
ভগবান পাখির আরাধনায় তুষ্ঠ হইয়া পাখির বাক্য খুলে দিল। তখন পাখি বলিতেছে ঃ মহারাজ
“কুহু কুহু রব করে,
কোকিলের নন্দন।
দৈব যুগে ধরা পরলো,
প্যাঁচার ও নন্দন। 
খাঁচার জ্বালায় মরিনাই, মহারাজ
খুচার জ্বালায় মরি ??
মহারাজ যদি কোন আদেশ করেন। 
তাহলে কিছু ফ্যাচুর ফ্যাচুর করতে পারি।
তখন মহারাজ পাখির কথা বুঝতে পারল। তখন পাখিটাকে ছেড়ে দিল। পাখিটা  উড়ে চলে গেল। 
 


সাহিত্য >> গল্প ও ছোট গল্প