ঘুম ভেঙেছিলো আগেই
বাকি ছিল আলস্য ভাঙার
আরো কিছু সুখ অবশিষ্ট ছিলো
অলস ছুটির দিনে একা বিছানায়।
সহসা হিংসায় জলে বেজে ওঠো কলিং-বেল;
দরজাটা অর্ধেক খুলেই হতবাক,
খানিকটা অপ্রস্তুত অবাক বিস্ময়ে -
লাল শাড়িতে মাধবী দাঁড়িয়ে।
খোলা চুল উড়ছে বাতাসে,
মুখে শুভ্র দ্যূতি, চোখে অপার রহস্য;
স্মিত হেসে বলে-
“পূর্ণ হোক জীবন ভরা বর্ষার মতো
ক্ষয়ে যাক গ্লানি আর দুঃখ-কষ্ট যতো;
নাম, যশ আর খ্যাতি তোমার ছড়াক বিশ্বময়
সব মানুষের ভালোবাসায় ধন্য হোক হৃদয়;
সাগর সমান অপার হোক তোমার আয়ুষ্কাল
সুখের আলোয় উদ্ভাসিত হোক প্রতিটি সকাল।
শুভ জন্মদিন
বারবার ফিরে আসুক শুভ এ দিন।”
আমি নির্বাক দাঁড়িয়ে,
মাধবীর পাতলা ঠোঁটে রহস্যময় হাসি,
ভ্রু দু’টো নাচিয়ে বলে-
“কি ভাবছো অমন করে ? কেনো এসেছি ?
হয়তোবা নিজেকে জড়াতে চাই বলে,
ঐ হৃদয়-সিন্ধুতে ডুবে মরবো বলে
নিজেকে তোমার কাছে সঁপে দেবো বলে।”
কেনো এত অবহেলা, অপমান তবে,
এমন উপেক্ষা, নির্দয় এড়িয়ে চলা ?
মাধবীর সহজ উত্তর-
“হয়তোবা ভালোবাসি বলে
অবহেলা করে ঢাকতে চেয়েছি নিজের দূর্বলতা
উপেক্ষা করে লুকাতে চেয়েছি অন্তর্গত বাসনা
জড়াবো না বলে চেয়েছি এড়াতে তোমার আহ্বান,
তবু অজান্তেই নিজেকে বেঁধেছি
অদৃশ্য বন্ধনে তোমার।
যখন টের পেলাম
আমার আঙিনায় তোমার নিয়ত পদচারণা,
চোখে ভালোবাসার দুরন্ত ঝড়-
আমাকে ঘিরে নিমগ্ন স্বপ্ন;
তখনই বুঝলাম, ঐ ঝড়ে তরী আমার ডুববেই।
উপেক্ষা ও অবহেলা দিয়ে তবু
আপ্রাণ চেষ্টা করেছি সর্বনাশ ঠেকাবার
আর সংকল্প করেছি কখনও জড়াবো না বলে;
কিন্তু আমার প্রতিটি রক্ত বিন্দু করেছে বিদ্রোহ
সেই সংকল্পের বিরুদ্ধে, প্রতি মুহূর্তে;
তাই তো হেরে গেলাম আমি।”
এ হেরে যাওয়া নয়-
প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে
হৃদয়ের নিকুঞ্জে কলি থেকে ফুলের প্রষ্ফুটন।
প্রথম দেখেই মনে হয়েছিলো-
তোমাকে ভালোবাসার জন্যই বুঝি জন্ম আমার;
কতোবার সে কথাটি বলতে চেয়ে ফিরেছি ব্যর্থ হয়ে;
এক সময় ধরে নিয়েছি-
হয়তোবা ঘৃণা করো আমাকে;
আজ বুঝলাম, অকারণ উপেক্ষা ও অবহেলা
সে তোমার ভালোবাসারই পূর্বরাগ।
এসো, আজ তিক্ত স্মৃতির যন্ত্রণা সব যাই ভুলে,
মিলে যাই আজ প্রাণে প্রাণে হৃদয়ের দ্বার খুলে-
ভালোবাসার ছাউনী গড়ে বাঁধব সুখের ঘর
ছাড়বো না হাত কোনোদিনও আসুক যতোই ঝড়;
পাখিদের মতো ডানা মেলে আকাশে বেড়াবো ভেসে
স্বপ্ন সাজাবো হদয় মাঝে চিরদিন ভালোবেসে।